Corporate News Details
নাগালের মধ্যে মানসম্পন্ন ক্যানসার চিকিৎসাসেবা দিতে চাই
ল্যাবএইডের ক্যানসার হাসপাতাল চালুর উদ্দেশ্য কী?
ক্যানসার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা এখন দেশেই রয়েছে। তবে শুধু ক্যানসার চিকিৎসার সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হাসপাতাল দেশে তেমন নেই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমার বাবা ডা. এ এম শামীম ক্যানসার হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা এখন রাজধানীর গ্রিন রোডে ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি সেন্টার নামে সেবা দিয়ে চলেছে।
এটি হবে সব ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় দেশসেরা ক্যানসার চিকিৎসক, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধার এক সমন্বিত প্রতিষ্ঠান
কী ধরনের প্রযুক্তি রয়েছে ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতালে?
ক্যানসার চিকিৎসায় আমরা একটা পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। এটি হবে সব ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় দেশসেরা ক্যানসার চিকিৎসক, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধার এক সমন্বিত প্রতিষ্ঠান। সুসজ্জিত প্যাথলজি ল্যাব, ডে কেয়ার সেন্টার, প্যালিয়েটিভ কেয়ার, সাইকোথেরাপি সেন্টার, সার্বক্ষণিক ফার্মেসি সেবা—সবই রয়েছে এখানে। এ ছাড়া এই ক্যানসার হাসপাতালে রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেডথেরাপি, হরমোনথেরাপি, জিনথেরাপি, রেডিওথেরাপি টেকনিক যেমন থ্রি–ডি সিআরটি (থ্রি–ডি কনফরমাল রেডিয়েশন থেরাপি), আইএমআরটি (ইনটেনসিটি মডিউলেটেড রেডিওথেরাপি),আইজিআরটি (ইমেজ-গাইডেড রেডিয়েশন থেরাপি), র্যাপিড আর্ক, এসআরএস (স্টেরিওট্যাকটিক রেডিও সার্জারি), এসবিআরটি (স্টেরিওট্যাকটিক বডি রেডিওথেরাপি), ব্র্যাকিথেরাপি, ইলেকট্রন বিম থেরাপি। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির মধ্যে থেকে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি আমরা।
১৫০ শয্যার পাশাপাশি রয়েছে বিশেষ কেমো বেডের ব্যবস্থা। ক্যানসারের সঠিক ডায়াগনসিস নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি দক্ষ ল্যাবরেটরি বিশেষজ্ঞ, হিস্টোপ্যাথলজিস্ট, ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজিস্টের সমন্বয় করা হয়েছে। আর এসবই রয়েছে একই ছাদের নিচে।
ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য হাসপাতালের কাছেই আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দেশের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের বড় একটি অংশ বিদেশে চিকিৎসাসেবা নেন, এ নিয়ে আপনার মতামত জানতে চাই?
দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের একাংশ বিদেশে চিকিৎসা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। অনেকে চিকিৎসা নিতে চলেও যান। এর পরের ধাপগুলো সবার জানা। যেহেতু ক্যানসার চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ, তাই যত সময় যায়, চিকিৎসার ব্যয় বাড়তে থাকে। এ ছাড়া দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তির শিকার হওয়ার কথাও শোনা যায়। এভাবে অনেকে নিঃস্ব হয়ে রোগীকে নিয়ে দেশে ফেরেন। তাঁদের উদ্দেশে আমার একটাই অনুরোধ, রোগীকে নিয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার আগে দেশের বিশ্বমানের চিকিৎসাব্যবস্থাসম্পন্ন এ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আমাদের হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসার খরচ বিদেশের তুলনায় অনেক কম।
করোনাকালে অনেকে হাসপাতালে আসতে অনীহা বোধ করেন?
ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধক্ষমতা) অন্যান্য রোগীর তুলনায় অধিক দুর্বল হয়ে থাকে। আমরা জানি, কোভিড-১৯ মানবশরীরে ইমিউন সিস্টেমকে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত করে। এ কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী ও পরিবারের সদস্যদের মনে একধরনের ভীতি কাজ করে। অনেক সময় কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি নিতে আসা রোগী এবং পরিবারের সদস্যরা রোগীর স্বাস্থ্যের নিরাপত্তার সম্পর্কে জানতে চান। তাঁদের নিশ্চিত করে আমরা বলি, যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতিমালা ও করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকি। আমাদের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট টিম (মান ব্যবস্থাপনা দল) রোগীকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সাইকোলজি কাউন্সেলিং টিম (মনস্তাত্ত্বিক পরার্মশ দল) রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়মিতভাবে মানসিক সমর্থন, সাহস ও শক্তি জোগাতে সাহায্য করে থাকে। কীভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারেও পূর্ণ সহযোগিতা করা হয়।
ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাই...
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় ৩০ বছর ধরে আস্থা ও ভরসার প্রতীক ল্যাবএইড। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ক্যানসার চিকিৎসায় বিপ্লব ঘটাতে এই হাসপাতালের যাত্রা। আমরা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে মানসম্পন্ন ক্যানসার চিকিৎসাসেবা দিতে চাই। ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য আমরা সারা দেশে ৩০টি পেরিফেরাল সেন্টার (প্রান্তিক কেন্দ্র) করার লক্ষ্যে কাজ করছি।